বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি ঃ বাবুগঞ্জে শ্রান্তি বিনোদনের ২ লক্ষাধিক টাকা অবৈধ ভাবে আত্বসাৎ করলেন সহকারী শিক্ষক আল-আমিন বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পেয়ে সরকারী অর্থ আত্বসাৎ করলেন উপজেলার চাচারি পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আল-আমিন সর্দার। ২০১৩ সালে তাকে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়। সেই সূত্রধরে সরকারী অর্থ ভাবে আত্বস্যাৎ করেন। অতিরিক্ত দায়িত্বের সুবাদে সোনালী ব্যাংকের খানপুরা শাখার মাধ্যমে (হিসাব নং ০৩২১১১০০৭৪৪২৭) এ অর্থ উত্তোলন করেন। শ্রান্তি বিনোদনের একাধিক অতিরিক্ত বোনাস,একই মাসে একাধিক বেতন সহ ৫ বছরে ২ লাখ ১৯ হাজার ৮০ টাকা নিজের সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে উত্তোলন ও আত্বসাৎ করেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তিন বছর অন্তর একটি শ্রান্তি বিনোদন ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও গত ৫ বছর একটানা তিনি ওই ভাতা উত্তোলন করেছেন। প্রতিবছর নিয়েছেন চারটি বোনাস, তুলেছেন ডাবল বেতন। আর গত চার বছরে এই বাড়তি বেতন ভাতা নিয়েছেন। এ ছাড়াও সহকারী শিক্ষক আল-আমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের জাল স্বাক্ষর করার তথ্যও পাওয়া গেছে। জানাগেছে,অভিযুক্ত আল-আমিন সর্দার মেডিকেল বোর্ডে স্বাক্ষর জাল করে তিনি অনেকের মেডিকেল বিল পাশ করিয়ে মোটা অংকের টাকা কামিয়েছেন। এছাড়াও এ কাজের সাথে যুক্ত থেকে বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোক্তার হোসেন নিজেও সহকারী শিক্ষক আল-আমিনের সর্দারের সাথে আতাত করে ২০১৭ সালে ২ বার শ্রান্তি বিনোদন বাবদ ৪০ হাজার ১ শত৭০ টাকা ও ২০১৮ সালে ২ বার শ্রান্তি বিনোদন ভাতা ৪৭ হাজার ৭ শত ৫৬ টাকা এবং ২০২০ সালে ২৯ হাজার ৫ শত ১০ টাকাসহ সর্বমোট ১লক্ষ ১৭ হাজার ৪শত ৩৬ টাকা অবৈধ ভাবে উত্তোলন করেন। শিলনদিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনির হোসেন ৯৯ হাজার ৩১৭ টাকা, জাহাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামাল হোসেন ৮৫ হাজার ৩৬৪ টাকা,কয়াদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী হারুন-অর-রশিদ ৭১ হাজার ৮৫৫ টাকা অবৈধ ভাবে এ অর্থ উত্তোলন করে নিয়ে যায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেখেন এরকম অন্তত ৯ জন শিক্ষক প্রতিবছর শ্রান্তি— বিনোদন ভাতা দ্বিগুণ বোনাস ও বাড়তি বেতন উত্তোলন করেছেন। অভিযুক্ত ওই সকল শিক্ষকদের গত ১৭ ডিসেম্বর কারণ দর্শানো নোটিশ দেন। ইতিমধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে অভিযুক্ত বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর আল-আমিন সর্দার বলেন একাধিক শিক্ষক নেতা এ কাজের সাথে জড়িত। আমি কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করছি আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি চক্র উঠে পরে লেগেছে বলে দাবি তার। বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকবর কবির বলেন, আমরা প্রমান পেয়েছি আল-আমিনসহ সর্দারসহ একাধিক শিক্ষকের হিসাবে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা বাড়তি নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন এ ঘটনার সাথে আরো অনেকে জড়িত থাকতে পারে বলে আমার সন্দেহ। তাই আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সরকার তদন্ত করতেছি। অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকে জবাব দিয়েছেন সেই জবাব গুলো দেখবেন। এরপরে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক মাসুদ আহমেদ বলেন, আল-আমিন সর্দার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকুরী করলেও তিনি ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষা অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন বেতন ভাতা সহ অন্যান্য আর্থিক কর্মকান্ড আল-আমিন করে থাকে। আর্থিক কেলেঙ্কারি আলামিনের মাধ্যমিক সংঘটিত হয়েছে।