কাউসার হামিদ শিকদার বিষয় প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের স্কুল শিক্ষার্থী মোছান্মৎ কলি আক্তারের খুনিদের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার।আজ ১৭ ফেব্রুয়ারী সকালে মিরসরাই পৌর শহরের জি বাংলা টেলিভিশন কার্যালয়ে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।সংবাদ সম্মেলনে নিহত কলির ২য় বোন তেতৈয়া দাওয়াতুল ইসলাম দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বিবি আয়েশা আক্তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।নিহত কলির মা ফিরোজা বেগম জানায় ঘটনার দিন তিনি তার (মা) ব্যক্তিগত কাজে সকাল ৯টার দিকে বাড়ী থেকে বের হয়ে কাজ শেষে সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বাড়ী ফিরে কলিকে ঘরে দেখতে না পেয়ে বাড়ীর লোকজনসহ খোঁজাখুঁজি শুরু করে এক পর্যায়ে ঘরের পাশে পুকুর পাড়ে আকাশি গাছের সাথে পরনের ওড়না দিয়ে বাঁধা দাঁড়ানো অবস্থায় কলির নিথর দেহ দেখতে পায় তার মা।মায়ের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে লাশ উদ্ধার করে প্রথমে মোস্তাননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বারাইয়ার হাট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে।হত্যাকারীদের চাপের মুখে লাশ ময়না তদন্ত না করেই রাত সাড়ে ৮টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।খুনীদের হুমকিতে মামলা করতে না দিলেও ঘটনার ৮ মাস পর কলির মা ফিরোজা বেগম বাদি হয়ে একই গ্রামের মৃত জালাল আহাম্মদের ছেলে মোঃ আবছার(৪০)কে প্রধান আসামী ও ফয়েজ আহাম্মদের ছেলে রুবেল(৩৫) কে দ্বিতীয় আসামী করে চট্টগ্রামের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দন্ডবিধি ৩০২/৩৪/৫০৬ সিআর মামলা নং-১২৭/১৯ইং একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।আদালত ঘটনার বিষয়ে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টগেশন (পিবিআই)কে কলির লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের নির্দেশ দেয়।পিবিআই লাশ উত্তোলন করে মামলার রিপোর্ট নিয়ে গড়িমসি করায় এবং দীর্ঘ ২ বছর হতে চলেছে কিন্তু কোন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় নিহতের পরিবার উক্ত তদন্তে সন্তুষ্ট না হয়ে পুনরায় আদালতে আপত্তি (নারাজি)জানালে আদালত পুনরায় তদন্তের জন্য জেলা ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেয়। ডিবি পুনরায় তদন্ত করার পর তিনমাস অতিবাহিত হলেও আজো কোন ফলাফল না পাওয়ায় নিহত কলির পরিবার বিচার নিয়ে সঙ্কায় আছে। কলির মা আরো জানায় খুনীরা আমার মেয়েকে হত্যা করে শান্ত হয়নি তারা আমার পরিবারের বাকি সদস্যদেরকেও হত্যার উদ্দশ্যে রাতের আধাঁরে বসত ঘরে আগুন দিয়ে সর্বস্ব জ্বালিয়ে দিয়েছে।আসামীরা বর্তমানে বুকফুলিয়ে চলাফেরা করছে এবং আমার অন্যান্য মেয়েদের বিষয়ে আজে বাজে মন্তব্য করে বেড়াচ্ছে মেয়েদের মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আমাদের হয়রানি করছে।আসামীদের হুমকী ধামকিতে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি।মা ফিরোজা বেগম সাংবাদিকদের আরো জানায় মেয়ের খুনীদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য তিনি(মা)প্রধানমন্ত্রী,আইন মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতা কামনা করেন। বর্তমানে আমি একটি প্রতিবন্ধী মেয়েসহ মোট তিনটি সন্তান ও স্বামী নিয়ে বহু কষ্টে দিন যাপন করছি।নিহত কলির মা জীবিত থাকা অবস্থায় মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে চায়। এসময় কলির বাবা রিক্সাচালক সিরাজুল ইসলাম,বড় বোন শিরিনা আক্তার কলি(প্রতিবন্ধী), ৩য় বোন তেতৈয়া দাওয়াতুল ইসলাম দাখিল মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাইশা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।