নিজস্ব প্রতিনিধি, রাকিব হাসান শাওনঃ কক্সবাজারের সন্তান কামরুল হাসান ফাহিম।কক্সবাজার মডেল হাই স্কুল থেকে ২০২০ সালে এসএসসি দিয়েছেন।মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে সবেমাত্র উচ্চ মাধ্যমিকে পা রেখেছেন। বয়সের দিক থেকে খুব বেশি পরিণত না হলে কাজের মাধ্যমে নিজের অসীম মানবিকতা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
সাম্প্রতিক সময়ে করোনা মহামারীতে যখন দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে চরম শঙ্কায় জীবন পার করেছিল। ঠিক সে সময়ে স্কুল জীবনের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে জমানো রাখা এবং বাবার দেওয়া অর্থ দিয়ে নিজের জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১১তম ধাপ পর্যন্ত, প্রায় ১৮’শ হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাধ্যমত,সে সাথে এতিম পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ, প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ার বিতরণ ও পড়ালেখা করার সুব্যবস্থা, করোনাকালে পাহাড়ি জনপদের মানুষদের টেলিমেডিসিন সেবা ও বিনামূল্যে ঔষুধ পৌঁছে দেন,রমজানে পথচারীদের মাঝে সেহেরি এবং ইফতার বিতরণ, ঈদে ও কুরবানে অসহায় মানুষের জন্য ঈদ উপহার বিতরণ থেকে শুরু করে,এই বয়সে প্রায় ১৫ হাজারের অধিক অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন নিজের সাধ্যমতে।
তাছাড়া করোনার আক্রমণ যখন আমাদের দেশে শুরু হচ্ছিল,তখন থেকে ফাহিম পথচারীদের মাঝে মাক্স ও লিফলেট বিতরণ করে মানুষকে সচেতন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গিয়েছিল।
করোনা দূর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ফাহিমের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।যা সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
করোনা দুর্যোগ ছাড়া, বিভিন্ন সংকটেও হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কক্সবাজার জুড়ে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন ফাহিম।
ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি পথশিশু ও হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে ২০১৯ সালে ফাহিম গড়ে তুলেছেন ‘সরণি স্বপ্ন ফাউন্ডেশন’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন। বর্তমান সংগঠনটি পরিচালনায় ফাহিমকে সহায়তা করছেন তার কিছু বড় ভাই,বেশকিছু সহপাঠী ও ছোট ভাই। যে সংগঠনের মাধ্যমে ফাহিম পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন, বিভিন্ন সংকটে হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ান, অর্থ অভাবে শিক্ষার আলো হতে বঞ্চিত শিশুদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকেন। ইতিমধ্যে “সরণি স্বপ্ন ফাউন্ডেশন এর মানবিক কার্যক্রমের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় সাড়া ফেলেছন।তার ফাউন্ডেশনটি কাজ করছে দেশের ৪টি বিভাগে।
কামরুল হাসান ফাহিম থেকে জানতে চাওয়া হয় কীভাবে, কেন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান?তিনি উত্তরে বলেন,আমি খুব ছোটবেলা থেকে অসহায় মানুষদের নিয়ে ভেবেছি। অসহায় মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখলে আমার নিজের কাছে খুবই কষ্ট হয়,তাই বিবেকের তাড়নায় আমি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আমার জীবনের পথচলাটা একটু ব্যতিক্রমী,সার্মথ্য থাকার পরও আমি নামীদামী রেস্টুরেন্টে না খেয়ে,প্রয়োজনের চেয়ে বাহিরে টাকা খরচ না করে, ঐ টাকাগুলো অসহায় মানুষের জন্য খরচ করি।তিনি আরও বলেন,আমি একজন ছাত্র হওয়ার পরও, আমি নিয়েছি আর্থিকভাবে অসচ্ছল হওয়ায় শিক্ষাজীবন থেকে ঝড়ে পড়া ৪টা শিশুর দায়িত্ব।এই কাজগুলো করতে গিয়ে অনেকবার বাঁধা বিপত্তির শিকার হয়েছি,তবে হাল ছেড়ে দেইনি।
ফাহিম সবার উদ্দেশ্য আরও বলেন,যার যতটুকু সার্মথ্য সবাই যেন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়।তাহলে বদলাবে সমাজ, বদলাবে শহর,বদলাবে দেশ।তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন,যেন মানবিক কার্যক্রমগুলো চালিয়ে যেতে পারেন।